দেশের পাট খাত রক্ষায় রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) মতো দুই শতাংশ সুদে ঋণ পেতে আলাদা তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআইতে আয়োজিত এক সভায় এ দাবি জানান তারা।
এফবিসিসিআইর জুট অ্যান্ড জুট প্রোডাক্টস বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ওই সভায় পাট খাতের ব্যবসায়ীরা বলেন, স্বল্প সুদে তহবিল থেকে ঋণ পেলে, দেশের পাট খাত ঘুরে দাঁড়াবে এবং সম্ভাবনার শতভাগ কাজে লাগানো সম্ভব হবে।সভায় কাঁচাপাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাজেটে আরোপিত দুই শতাংশ উৎসে কর ও রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনায় ১০ শতাংশ হারে উৎস কর প্রত্যাহার, পাটপণ্যে ভারতের এন্টি-ডাম্পিং ডিউটি স্থায়ীভাবে প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া, বেসরকারি পাটকলের ব্যাংক ঋণ মওকুফ ও উচ্চ ফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সভায় শতভাগ রপ্তানিমুখী পাটপণ্যে কর না চাপানোর আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্যের দুরাবস্থায় তৃণমূলের বহু মানুষের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে। এ খাতকে বাঁচাতে সরকারের নীতিসহায়তা দরকার। এজন্য পাট ও পাটজাত পণ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, এখন সময় এসেছে পাট খাতের জাগরণের। বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিক নিষিদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে পাটের চাহিদা বেড়েছে। এ খাতের উন্নয়নে নীতিসহায়তা পেতে এফবিসিসিআই সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, পাট একইসাথে শিল্প ও কৃষিপণ্য হওয়ায় ২০০ ভাগ মূল্য সংযোজন হয় এ খাতে। শতভাগ রপ্তানি পণ্য হওয়ার পরেও অগ্রিম আয়কর দিতে হয়। যা চলে যায় ক্রেতার উপর। এসব কারণে পাটপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এ খাতের খরচ কমাতে কম সুদের ঋণ তহবিল গঠন করা দরকার।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশে জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন। তিনি বলেন, পাট পরিবেশবান্ধব প্রাকৃতিক তন্তু হওয়ায় পৃথিবীর প্রায় সব দেশে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু ব্যাংক ঋণে উচ্চ সুদ, কাঁচাপাটের চড়া দাম এবং সেই তুলনায় পণ্যের বিক্রয়মূল্য কম হওয়ায় মিল মালিকরা চলতি মূলধনের সংকটে ভুগছেন। এমন পরিস্থিতিতে এ খাতের জন্য স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ অত্যন্ত জরুরি।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল বারিক খান, এফবিসিসিআইর পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, কমিটির কো-চেয়ারম্যান শেখ নাসিরউদ্দিন, মো. রবিউল আহসান, মো. শফিকুল ইসলাম, হাসেন আলি, এস. আহমেদ মজুমদার প্রমুখ।