দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যখন দেড় বছর বাকি, তখন বিএনপি রাজনৈতিক ময়দানে নিস্ক্রিয় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আর দেড় বছর পরে নির্বাচন। এখন বিএনপিকে দেখা যায় না, মাঝেমধ্যে গর্ত থেকে উঁকি দিয়ে চায় আর চোরাগোপ্তা মিছিল করে ‘মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর নন্দীপাড়া মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সবুজবাগ থানার ৭৪ নং ওয়ার্ডের ইউনিটগুলোর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সংসদে বিএনপি নেতারা বলেছেন, শক্তিশালী বিরোধী দল দরকার। আমরাও চাই আপনারা শক্তিশালী হোন। কিন্তু তারা একে একে যেসব আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেয়, সে কারণে তারা শক্তিশালী হতে পারে না। আশা করবো তারা আত্মহননের সিদ্ধান্ত পরিহার করে নিজেরা শক্তিশালী হবে, দেশের গণতন্ত্রকেও শক্তিশালী করবে।’
বিএনপি নেতারা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আইনগতভাবেই বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্বাচন করার কোনো সুযোগ নেই সেজন্য তারা নির্বাচনে যাবে কি না, সে নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকে। তবে যত কথাই বলুক, আগামী নির্বাচনে তারা অংশ নেবে এবং নির্বাচনের আগে গর্তের ভেতর থেকে বেরিয়ে নানা ধরণের বিভ্রান্তি ছড়াবে।’
পদ্মা সেতু নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বিরোধিতা ও আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে আসা বিএনপি পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর পদ্মা নদীতে ‘ডুবে গেছে’ বলে মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বিএনপির রাজনীতি পদ্মা নদীর মাঝখানে ডুবে গেছে। তাই প্রথমে তারা আবোলতাবোল বলেছিলো। এখন বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে, কি বলবে বুঝতে পারছে না। আমি আশা করব, তারা তাদের রাজনীতি পদ্মা নদীর মাঝখান থেকে উদ্ধার করতে পারবে এবং অতীতের অপকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে জনগণের কাছে যাবে।’
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগই জিতবে উল্লেখ করে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সেই বিজয় নিশ্চিত করতে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। ২১ বছর ধরে যারা বুকে পাথর বেঁধে দল করেছে, সমস্ত রক্তচক্ষু, ষড়যন্ত্রের মধ্যেও দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছে, তাদেরই নেতৃত্বে থাকা দরকার।’
গত সাড়ে ১৩ বছরে যারা আওয়ামী লীগের সদস্য হয়ে কেবল ক্ষমতালিপ্সু হয়ে উদ্ধত আচরণ করেছে তাদের দলে দরকার নেই বলে জানিয়ে দেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘যারা গত সাড়ে ১৩ বছরে নতুন আওয়ামী লীগ হয়েছে তারা বিরোধী দল দেখে নাই, শুধু ক্ষমতা দেখেছে, সুতরাং তাদেরকে নেতৃত্বে আনার কোনো প্রয়োজন নেই। এবং ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হবে। কোনো নেতাকর্মীর উদ্ধত আচরণের জন্য আমরা দলের মর্যাদা বিসর্জন দিতে পারি না। আর মাদক, দখল-চাঁদাবাজির সাথে যুক্তদেরকে বর্জন করুন। আমাদের দলে তাদের দরকার নেই।’
সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমদ মন্নফী। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর প্রধান বক্তা হিসেবে এবং সহ-সভাপতি শদীদ সেরনিয়াবাত, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন বক্তব্য রাখেন। আরও বক্তব্য রাখেন সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি আশরাফুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাস।