পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন চলাচল কমে গেছে। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর গত কয়েক দিনে এই পথে যানবাহন পারাপার প্রায় অর্ধেকে নেমেছে।
এদিকে সেতু চালু হওয়ার পর শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথে ফেরি পার হতে আসছে না যানবাহন। যদিও এক দিন মোটরসাইকেল পার করে দিতে চলেছে ফেরি। আপাতত নাব্যতা সংকটের কারণে এই পথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পাটুরিয়া ঘাট সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে প্রতিদিন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে গড়ে সাড়ে আট হাজার যানবাহন পারাপার হতো। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর তিন দিন ধরে পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস কম আসছে। আর আগের তুলনায় ছোট গাড়ি পারাপার অর্ধেকে নেমে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এখন গড়ে চার হাজারের মতো যানবাহন এই নৌপথ ব্যবহার করছে। সর্বসাধারণের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার দিন মালবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী বাসসহ মোট পাঁচ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। দ্বিতীয় দিনে পারাপার হয় চার হাজার ৩৬৬টি যানবাহন। আর গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত পাড়ি দিয়েছে এক হাজার ৬১০টি যানবাহন।
বিআইডাব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম খালিদ নেওয়াজ বলেন, ‘পদ্মা সেতু খুলে দিয়েছে মাত্র তিন দিন। এত তাড়াতাড়ি বোঝা যাবে না এ পথে যানবাহন সংখ্যা কমে গেল কি না। কারণ দেশে যানবাহন বাড়ছে, মানুষ বাড়ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ এ পথ ব্যবহার করবেই। ’ তিনি জানান, এই নৌপথে ছোট-বড় ২১টি ফেরির সঙ্গে আরেকটি ফেরি যুক্ত করা হয়েছে।
সচল থাকবে শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথ
আসন্ন ঈদ যাত্রায় শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি পথে পারাপারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিআইডাব্লিউটিসির সাতটি ফেরি। পদ্মা সেতু চালু হলেও এসব ফেরি এখনই সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না। তবে এই নৌপথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নাব্যতা সংকট। এ সংকটের কারণে ফেরি ডুবোচরে আটকে যাওয়ায় আপাতত ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ড্রেজিং করে নৌপথ সচল করতে এরই মধ্যে বিআইডাব্লিউটিএকে চিঠি দিয়েছে ফেরি কর্তৃপক্ষ।
এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডাব্লিউটিসি) পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান জানান, শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি পথে ফেরি থাকলেও নাব্যতা সংকটে তা চলাচল করতে পারছে না। পদ্মা সেতু চালুর পর এ ঘাটে কোনো যানবাহন পারাপারের জন্য আসেনি। তবে সেতুতে মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ হওয়ার পর গত সোমবার ফেরি কুঞ্জলতা ১১৯টি মোটরসাইকেল নিয়ে শিমুলিয়া থেকে মাঝিরকান্দির উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরিটি মাঝপথে আটকা পরে। তিন ঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধারের পর এটি গন্তব্যের দিকে যায়।
আশিকুজ্জামান বলেন, নাব্যতা সংকট থাকায় ফেরিগুলো আপাতত পদ্মা নদী পাড়ি দিতে পারছে না। তাই ইচ্ছা থাকলেও ফেরি ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া গাড়িগুলো এখন সেতু দিয়েই পার হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ নৌপথে আমাদের সাতটি ফেরি রয়েছে। ঈদের সময়ও ফেরিগুলো এখানেই থাকবে। নৌপথ সচল আর গাড়ি থাকলে আমরা ফেরি চালাব। আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। ’