সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাজীকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বুধবার সকালে সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওসি বলেন, অভিযুক্ত জিতুকে এখনও পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবাকে রাতে কুষ্টিয়া থেকে আটক করে আশুলিয়া থানায় আনা হয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত ২৫ জুন শনিবার দুপুরে চিত্রশাইলে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্র ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের ওপর। প্রথমে ওই ছাত্র শিক্ষকের মাথায় আঘাত করে এবং পরে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এ ছাড়া স্ট্যাম্পের সূচালো অংশ দিয়ে পেটের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় উৎপলকে প্রথমে আশুলিয়া নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার ভোরে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক উৎপল সরকার একইসঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি।
প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি এ কলেজে অধ্যাপনা করে আসছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে তিনি এই কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামে। পরিবার নিয়ে তিনি ঢাকার মিরপুরে বসবাস করতেন।
উৎপলের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বলেন, মেয়েদের টিজি করত জিতু। তাকে শৃঙ্খলা কমিটিতে ডেকে নিয়ে শাসন করেছিলেন শিক্ষকরা। সেই ক্ষোভ থেকে উৎপলের ওপর হামলা করেছে ওই ছাত্র।
বিদ্যালয়ের এক কর্মী জানান, হামলার আগে বিদ্যুতের মেইন সুইস অফ করে দিয়েছিল জিতু, যাতে সিসিটিভি ক্যামেরায় ভিডিও দেখা না যায়।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার এসআই এমদাদুল হক বলেন, অভিযুক্ত জিতুসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। জিতুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।