লন্ডনে রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানের দিনে রাজতন্ত্র বিরোধী গ্রুপ রিপাবলিকের নেতাসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডসহ এরা ট্রাফালগার স্কোয়ারের কাছে জড়ো হচ্ছিল।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ‘নট মাই কিং’ লেখা টি-শার্ট পরা রিপাবলিকের সদস্যদের পুলিশ আটক করছে। এদের মধ্যে গ্রুপের নেতা গ্রাহাম স্মিথও ছিলেন।
গ্রেপ্তারের আগে তারা ট্রাফালগার স্কোয়ারের কাছে গাড়ি থেকে তাদের প্ল্যাকার্ড নামাচ্ছিলেন। এই স্থানের কাছ দিয়েই অভিষেক অনুষ্ঠানের শোভাযাত্রা যাচ্ছিল।
রিপাবলিক এক বিবৃতিতে বলেছে, কেনো তাদের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যা পুলিশ কর্মকর্তারা দেননি। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার যেভাবে হরণ করা হলো, রিপাবলিক তার সমালোচনা করেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া রিপাবলিক সদস্যদের একজন ম্যাট টার্নবুল বলেন, যে স্ট্র্যাপ দিয়ে তাদের প্ল্যাকার্ডগুলো বেঁধে রাখা হয়েছিল, সেটিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে বলা হচ্ছে এটি দিয়ে কেউ নিজেকে কোন কিছুর সঙ্গে আটকে রাখতে পারবে।
টার্নবুল বিবিসিকে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী আমাদেরকে কোনোদিনই এরা দৃশ্যমান হতে দেবে না, ওরা জানতো আমরা এখানে আসছি। আমাদের থামানোর জন্য ওরা কোনো একটা উপায় খুঁজে বের করতোই।’
টার্নবুলকে পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়। ব্রিটেনে এ সপ্তাহে যে নতুন আইন পাশ হয়েছে তাতে রাস্তার ধারে কোন কিছুর সঙ্গে নিজেকে আটকে রাখার প্রস্তুতি নেওয়া অবৈধ করা হয়েছে। ব্রিটেনে কিছু গোষ্ঠী, বিশেষ করে পরিবেশবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায় এভাবে নিজেদের আটকে রেখে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ ঠিক কত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা বলেনি, তবে তারা নিশ্চিত করেছে যে কিছু লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিপাবলিক জানিয়েছে, তাদের অনেক প্ল্যাকার্ড পুলিশ জব্দ করেছে। তারা প্রশ্ন তুলেছে, ‘এটা কি গণতন্ত্র?’
গ্রুপটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘অনেকেই প্রশ্ন করছে, কেনো আমরা প্রতিবাদ করছি। কারণ আমরা অভিষেকের এই উপলক্ষটা ব্যবহার করতে চাই রাজতন্ত্র নিয়ে যে বিতর্ক সেটা বদলে দেওয়ার জন্য। আমরা দেখাতে চাই যে আমরা রাজতন্ত্রপন্থী কোনো জাতি নই।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এসব গ্রেপ্তারের নিন্দা করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘এভাবে লোকজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা মস্কোতে ঘটে, লন্ডনে এরকম ঘটতে পারে আমরা আশা করি না।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের যুক্তরাজ্য শাখার পরিচালক ইয়াসমিন আহমেদ বলেন, ‘অভিষেকের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভের কারণে লোকজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক।’