দেশের তামাকপণ্য ব্যবহারকারীর প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করে। অথচ সিগারেট ছাড়া বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাকের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর হার মাত্র ০.৩ শতাংশ।
টোবাকো কন্ট্রোল রিসার্চ সেলের (টিসিআরসি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ৭৯ শতাংশ তামাকপণ্যের মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী পাওয়া গেছে। কিন্তু তাদের অনেকেই আইন পুরোপুরি মানছে না। এতে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তামাকপণ্যে গ্লোবাল হেল্থ ওয়ার্নিং বা স্বাস্থ্য সতর্কবাণী তামাক নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী, সব তামাকপণ্যের মোড়কের ৫০ ভাগ জায়গাজুড়ে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী থাকার কথা। তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোরও দাবি এটি।
গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোবাকোর জরিপ বলছে, বাংলাদেশে তিন কোটি ৭৮ লাখ মানুষ যেকোনো মাধ্যমে তামাকদ্রব্য ব্যবহার করে। এরমধ্যে সিগারেটের ভোক্তা এক কোটি ৫০ লাখ। বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের ভোক্তা ২ কোটি ৭৩ লাখ। এদের মধ্যে কেউ কেউ একাধিক ধরণের তামাক ব্যবহার করে।
জানা যায়, এনবিআরের তালিকাভুক্ত ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের ব্র্যান্ড মাত্র ২০টি। অথচ টিসিআরসির কাছে ৪৩০টি ব্র্যান্ডের তালিকা রয়েছে। তালিকাভুক্ত নয় এমন ব্র্যান্ডগুলোর ক্ষেত্রে নজরদারি নেই। ফলে আইন ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিগুলো।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সেক্রেটারি আব্দুর রহমান বলেন, গত দুই বছর ধরে এনবিআর যাদেরকে অনুমোদন দিচ্ছে, তারা আসলে প্রকৃত মালিক নয়। তারা ট্যাক্স দেয় না, বিড়িতে ভালো কাঁচামাল দেয় না। প্রকৃত মালিকরা যেখানে ১৮-২০ টাকায় বিড়ি বিক্রি করছে। তারা ৮-১০ টাকায় বিক্রি করছে। অথচ প্রতিটি বিড়ির জন্য সরকারকে দিতে হয় ৯ দশমিক ৩০ পয়সা।
তিনি বলেন, প্যাকেটের ওপরে লেখা থাকবে, ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বিকট একটা ছবি থাকবে। এটার অভিজ্ঞতা বা মান, কোনোটাই ভুয়া মালিকদের নেই। ওরা বোঝেও না। পুরোনোদের মধ্যেও অনেকে আছে যারা এই সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ব্যবহার করে না। এ বিষয়ে সরকারের কোনো তদারকি নেই।