লাইসেন্স নেওয়ার সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন- গ্রামীণ ফোনের টাকা গ্রামীণ ব্যাংকে যাবে, কিন্তু সেই টাকা গ্রামীণ ব্যাংকে যায়নি বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে গ্রামীণ ফোনের লাইসেন্স দিয়েছিলেন এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল গ্রামীণ ব্যাংকের নামে। তখন বলা হয়েছিল, গ্রামীণ ফোনের টাকাটা গ্রামীণ ব্যাংকে যাবে। কিন্তু সেই টাকা কি গ্রামীণ ব্যাংকে গেছে! যায়নি। গ্রামীণ ব্যাংকে না গিয়ে সেই টাকা বিভিন্ন জায়গায় গেছে এবং তিনি ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে যে অনুদান দিয়েছিলেন, তা গতকালের বিবৃতিতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু দেশ-বিদেশের সব পত্র-পত্রিকায় যখন সেটি বেরিয়েছিল, তখন তো তিনি অস্বীকার করেননি। আজ এত বছর পর কেন তিনি অস্বীকার করছেন, অর্থাৎ ডাল মে কুচ কালা হ্যায়।’
‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কারের অর্থ দিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ চালু করেছিলেন, আর ক্ষুদ্র ঋণের কথা বলে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ড. ইউনূসের পুরস্কারের অর্থ তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টেই আছে, গ্রামীণ ব্যাংকেও যায়নি, অন্য কোনো জনহিতকর কাজেও তিনি খরচ করেননি- বলেন তথ্যমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, ড. ইউনূস সাহেব বেআইনিভাবে ১০ বছর অতিরিক্ত সময় গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডি ছিলেন এবং আরও থাকতে চেয়েছিলেন। ব্যাংকের এমডিদের বয়সসীমা বাংলাদেশে ৬০ বছর। কোনো বেসরকারি ব্যাংকেও এ বয়সের পর আর এমডি থাকা যায় না। তার বয়স তখন ৭০ এর কোঠায় অর্থাৎ কমপক্ষে ১০ বছর অতিরিক্ত সময় ধরে তিনি এমডি ছিলেন। আর গ্রামীণ ব্যাংক হচ্ছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বা কর্মসংস্থান ব্যাংকের মতো সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, যেখানে সরকারের শেয়ার আছে। গ্রামীণ ব্যাংকে তখন সরকারের শেয়ার ছিল ৫১ শতাংশ ও অন্যদের ৪৯ শতাংশ।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সংবিধিবদ্ধ অন্য ব্যাংকের জন্য যে আইন এখানেও সেই আইন। কিন্তু তিনি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমডির দায়িত্বে ছিলেন। সরকার তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরে ব্যাংক ছেড়ে যেতে বলেনি, বরং উপদেষ্টা হতে বলেছিল। তখন তিনি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করলেন। মামলায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পর্যন্ত গেছেন এবং হেরেছেন। অর্থাৎ তিনি যে বেআইনিভাবে এমডি পদে ছিলেন, সেটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়ে নিশ্চিত করেছে।’
সরকার সবসময় গ্রামীণ ব্যাংককে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিশেষ করে ১৯৯৮ সালের বন্যার পর যখন তাদের ঋণ গ্রহীতারা অর্থ ফেরত দিতে পারছিল না, তখন শেখ হাসিনার সরকার বিভিন্ন সময়ে গ্রামীণ ব্যাংকে ৪শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল।