আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন অথচ করযোগ্য আয় নেই—এমন ব্যক্তিদের ওপরও ন্যূনতম কর আরোপের কথা ভাবছে সরকার। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রায় ৮৬ লাখ লোকের টিআইএন (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) থাকলেও তাদের বড় অংশই রিটার্ন দাখিল করেন না। তাদের সবাইকে করের আওতায় আনার পাশাপাশি রাজস্ব বাড়ানোর আরো পথ রয়েছে। কিন্তু করযোগ্য আয় নেই, তার পরও ন্যূনতম কর আরোপের বিধান যৌক্তিক হবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ন্যূনতম কর হিসেবে ২ হাজার টাকা আরোপ করা হতে পারে। পরে ধীরে ধীরে সব টিআইএনধারীর ওপর এই কর আরোপ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায়, ব্যক্তিশ্রেণিতে টিআইএনধারীর সংখ্যা প্রায় ৮৬ লাখ। এর মধ্যে মাত্র ৩২ লাখ ব্যক্তি আয়কর রিটার্ন জমা দেন। তাদের মধ্যে প্রায় আট লাখের করযোগ্য আয় নেই। তাদের ওপর ন্যূনতম কর ধার্য হলে সরকারের বাড়তি ১৬০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে। আর ন্যূনতম করের নিয়মটি সব টিআইএনধারীর ওপর প্রয়োগ হলে ১ হাজার ২৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে।
করমুক্ত আয়সীমার বেশি আয় থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া সরকার অথবা সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, সত্তা বা ইউনিট বা প্রচলিত কোনো আইন, আদেশ বা দলিলের মাধ্যমে গঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, সত্তা বা ইউনিটের কর্মচারীর মাসিক বেতন ১৬ হাজার টাকা কিংবা এর বেশি হলে কোনো ব্যবসা বা পেশায় যে কোনো নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পদে বেতনভোগী কর্মী, ফার্মের অংশীদার, মোটরগাড়ির মালিক, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে কোনো ব্যবসা বা পেশা পরিচালনা করাসহ ১৯ ধরনের ব্যক্তির রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ছাড়া ৪০ ধরনের সেবায় আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ উপস্থাপন করতে হয়।
বর্তমানে ব্যক্তিশ্রেণিতে করমুক্ত আয়সীমা পুরুষ করদাতাদের জন্য ৩ লাখ টাকা, নারী ও ৬৫ বছর বয়সী পুরুষদের জন্য সাড়ে ৩ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে ৪ লাখ টাকা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আয়সীমার নিচে হলে একজন করদাতা শূন্য আয় দেখিয়েও রিটার্ন জমা দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কোনো কর দিতে হয় না।