আফগানদের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে জয়টা যেন লেখাই ছিলো বাংলাদেশের, দেখার ছিলো সেটা কত তাড়াতাড়ি আসে। কাঙ্ক্ষিত সেই জয় পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন প্রথম সেশনেই আফগানদের অলআউট করে ৫৪৬ রানের বিশাল এক জয় তুলে নিয়েছে লিটন দাসের দল। নিজেদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় এটিই। আর টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে শুধু রানের হিসেবে এর চেয়ে বড় জয় আছে মাত্র দুটি।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের একমাত্র ম্যাচে মাঠে না,আর আগে একটা ভয় যেন ঠিকই ছিলো বাংলাদেশি ভক্ত-সমর্থকদের মনে। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মুখোমুখি হওয়া প্রথম টেস্টেই চট্টগ্রামে ২২৪ রানের হার যেন এখনো দগদগে এক ক্ষত টাইগার ক্রিকেটে। সেই হারের মোক্ষম জবাবই যেন এবার দিলো বাংলাদেশ। প্রতিশোধও নেওয়া হলো, সঙ্গে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডও লেখা হলো মিরপুরেরহোম অব ক্রিকেটে।
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য এক সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রান করে বাংলাদেশ। জবাব এবাদত-শরীফুলের বোলিং তোপের মুখে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানেি গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান।ফলোঅনের সুযোগ থাকলেও তা না করিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ২৩৬ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে আবাও তিন অঙ্কের দেখা পান শান্ত। সঙ্গে মুমিনুল হকের ব্যাট থেকেও আছে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ৬৬২ রানের বিশাল বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে টাইগার বোলারদের তোপের মুখে পড়ে ১১৫ রানেি থামতে হয় আফগানদের। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের রানের ব্যবধানে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৪৬ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
৬৬২ রানের টার্গেটে তৃতীয় দিন বিকেলে ৪৫ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। আজ সকালে কত দ্রুত বাংলাদেশের জয় আসে সেটিই ছিলো দেখার বিষয়। টাইগার বোলাররা সেই কাজটি সেরেছে বেশ দ্রুতই। লাঞ্চের আগেই টাইগার বোলাররা তুলে নিয়েছে আফগানিস্তানের বাকি ৮ উইকেট।
আজ দিনের তৃতীয় ওভারেই এবাদতের বলে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন আফগান ব্যাটার নাসির জামাল। এবাদতের পরই আফগান শিবিরে জোড়া ধাক্কা দেন শরীফুল। ত্তুলে নেন আফসার জাজাই আর আগেরদিন রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া হাশমতুল্লাহ শহিদীর কনকাশন হিসেবে উইকেটে আসা বাহির শাহকে।
৭৮ রানেই ৫ উইকেট হারানো আফজ্ঞানদের হয়ে রহমত শাহ একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে গেলেও শেষমেশ তাসকিন আহমেদের বলে হার মানেন তিনি। আফগানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০ রান করে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। এরপর বাকিরা আর তেমন কিছুই করতে পারেননি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানেই গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। বাংলাদেশও পায় ৫৪৬ রানের ইতিহাসগড়া বিশাল বড় জয়। প্রথম ইনিংসে ভালো পারফর্ম না করা তাসকিন দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রান দিয়ে একাই নেনে ৪ উইকেট। শরিফুল নেন ৩ উইকেট। আর এবাদত ও মিরাজ নেন ১টি করে উইকেট।