বিশ্ব ক্রিকেটে ‘চোকার’ হিসেবে পরিচিতি আছে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের। তবে অনেকে এখন ভারতীয় ক্রিকেট দলকেও ‘চোকার’ হিসেবে অভিহিত করছেন। গত ১০ বছর ধরে আইসিসির কোন টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি ভারত। সদ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও শিরোপা হাতছাড়া করে ভারত। তাই ভারতের নামের পাশে ‘চোকার্স’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন সমালোচকরা। কিন্তু ভারতকে ‘চোকার্স’ মানতে রাজি নন দেশটির সাবেক খেলোয়াড় ও কোচ রবি শাস্ত্রী। তিনি জানান, বছরের পর বছর ধরে সাফল্য পাচ্ছে ভারত। কোন ব্যক্তিকে দোষ দেওয়া যায় না।
২০১৩ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে সর্বশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিলো ভারত। এরপর থেকেই আইসিসির শিরোপা খরায় টিম ইন্ডিয়া। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারেনি ভারত।
২০১৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় ভারত। পরের বছর ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে আবারও হারে তারা। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে চিরপ্রতিন্দ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে হেরে যায় ভারত।
২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হার মানে ভারত। ২০২১ সালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠও নিউজিল্যান্ডের কাছে আত্মসমর্পন করে টিম ইন্ডিয়া। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিতে থামে ভারতের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। চলতি মাসে দ্বিতীয় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে লজ্জাজনক হারের স্বাদ নিয়ে আরও একটি আইসিসি ট্রফি জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করে ভারত।
এতে দক্ষিণ আফ্রিকার মত চোকার্স শব্দটি ভারতের পাশে মানানসই বলে মনে করেন ক্রিকেট সমালোচকরা। কিন্তু সমালোচকদের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না শাস্ত্রী। ভারতের দ্য উইক পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাচ্ছি, যে দু’টি দল খেলছিল (ভারত-অস্ট্রেলিয়া) তারাই কেবলমাত্র তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ পেয়েছিলো। এমন নয় আমরা (বিশ্বকাপে) বিধ্বস্ত হয়েছি। আমরা সেমিফাইনাল ও ফাইনাল খেলেছি। আমরা জিততে পারিনি, কারণ আপনি যখন বড় কিছু জিততে চান, তখন আপনার দলীয় প্রচেষ্টার প্রয়োজন পড়ে। আপনি একজন ব্যক্তি, একজন অধিনায়ককে দোষারোপ করতে পারবেন না।’
ব্যাটাররা বড় ইনিংস খেলতে না পারার কারণে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত হেরেছে বলে মনে করেন শাস্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ব্যাটারের কাছ থেকে সেঞ্চুরি দরকার । তাহলে বোলারদের লড়াই করার জন্য মঞ্চ তৈরি হয় এবং ট্রফি জয়ের ভাল সুযোগ থাকে। যদি আপনি সেঞ্চুরি না পান, তাহলে কমপক্ষে তিনটি হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংস দরকার পড়ে, সেটি টেস্ট-ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি যে ধরনের ক্রিকেটই হোক না কেন। যদি আপনি সেটি করতে না পারেন তবে আপনি জয়ের যোগ্য নন।’