বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, পাশ্চাত্যের গণতন্ত্রের রীতিনীতি মেনে এখন আন্দোলন করছি। কিন্তু যেখানে সার্জারি দরকার সেখানে বছরের পর বছর হোমিওপ্যাথি ডোজ দিলে কাজ হবে না। এখন মার দিতে আসলে পাল্টা মার দিতে হবে। সুতরাং এখন থেকে আন্দোলন হবে ডু অর ডাই।
এদিকে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে যশোর জেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ক্ষমতায় আপনারা যেতে পারবেন না। যদি আপনারা ভালো হতে না চান, মার শুরু হবে, মার। শান্ত যশোরকে অশান্ত করার চেষ্টা করলে সত্যি সত্যি এবার আপনাদের মার দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় রোড মার্চ চলাকালে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঝিনাইদহ থেকে মাগুরা হয়ে বেলা ২টায় রোডমার্চ যশোরের পুলেরহাটে পৌঁছায়। সেখানে সভা শেষে বিকাল ৪টায় যশোর শহরের মুড়লি মোড়ে সভায় এ বলেন তিনি।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আমরা এখন আর বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই না, তাকে মুক্ত করবো। দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত করে, জনগণকে দুঃশাসনের হাত থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকেও মুক্ত করবো।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় রোড মার্চ চলাকালে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার পুলেরহাট, যশোর সদরের মুড়লী ও অভয়নগর থানার নওয়াপাড়ায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, গত ১৫ বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ আজ মাঠে নেমে এসেছে। আমরা বলছিনা যে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী বানান। বলছি না যে আমাদের মন্ত্রী বানান। আমরা বলছি, আমাদের ভোটের অধিকারটা দেন। ভোটের অধিকার চাইলেই পোশাকধারীরা আমাদের পেছনে লেগে যাচ্ছে। এ যেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, আমাদের শোষণ ও শাসন করছে। স্পষ্ট করে বলতে চাই আমরা কারও রাজত্বে বসবাস করি না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক খালি হয়ে গেছে। রিজার্ভ নাই। সমস্ত কিছু ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ডলারের দাম বেড়ে গেছে। আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। অনেক সমস্যায় পড়ে যাবে দেশ।
আব্বাস বলেন, জনগণের লুট করা টাকা ফেরত নিয়ে আসেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে সংসদ ভেঙে দিয়ে জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিন। জনগণ মাফ করলেও করতে পারে।
এসব পথসভা দৃশ্যত জনসভায় রূপ নেয়। শত শত মানুষ রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে রোডমার্চকে স্বাগত জানায়। সভাগুলোতে মির্জা আব্বাস ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, দলের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ অনেকে বক্তৃতা দেন।
প্রতীকী কারাগারে খালেদা জিয়ার সাজে
যশোর মুড়লী মোড়ে সমাবেশ শুরুর পর উপস্থিত নেতা-কর্মীদের নজর কাড়ে খালেদা জিয়ার প্রতীকী কারাগার। এর ভেতর থেকে একটি শিশু খালেদা জিয়া সেজে সবাইকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল। একটি পিকআপের উপরে প্রতীকী কারাগারের বাইরে নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এ সময় উৎসুক নেতা-কর্মীরাও তার সঙ্গে সেলফি ও ছবি তুলতে দেখা যায়। পাশাপাশি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই গানও বাজতে শোনা যায়।
পিকআপের উপরে থাকা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হামিদুল ইসলাম বলেছেন, তিনি তার মেয়েকে খালেদা জিয়ার সাজে সাজিয়ে প্রতীকী কারাগারে আবদ্ধ করে সমাবেশস্থলে আসেন। মঞ্চের চারপাশে ঘোরে এই শিশু। এ সময় নেতা-কর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানায়।