বিশ্বের বড় বড় সব ডার্বির মতো আর্জেন্টিনার এল সুপার ক্লাসিকোও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং ঐতিহ্যবাহী। তবে বুয়েনস আইরেসের দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিভারপ্লেট ও বোকা জুনিয়র্সের মধ্যকার সুপার ক্লাসিকোর উত্তাপ-উত্তেজনাটা অন্য আর সব ক্লাসিকোর চেয়ে বেশিই। মুখোমুখি সাক্ষাৎ উপলক্ষ্যে প্রায়শই দুই দলের খেলোয়াড়, সমর্থকদের মধ্যে মারামারি, হাঙ্গামার খবর পাওয়া যায়। তবে এবার যেটা ঘটল, তেমনটা অতীতে খুব কমই ঘটেছে। আর্জেন্টাইন সুপার ক্লাসিকো কেন, বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসেই এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি। মারামারিতে জড়ানোই পরশু এক ম্যাচেই যে দুই দলের মোট সাত জনকে লাল কার্ড দেখিয়েছেন রেফারি।
ঘটনা সত্যিই, পরশু রিভারপ্লেট ও বোকা জুনিয়র্সের ম্যাচে মোট ৭ জনকে লালকার্ড দেখাতে বাধ্য হয়েছেন রেফারি। দুই দলের সমান তিন জন করে খেলোয়াড়ের পাশাপাশি বোকা জুনিয়র্সের কোচ হোর্হে আলমিলনকেও লাল কার্ড দেখিয়েছেন রেফারি। সঙ্গে ৮ বার হলুদকার্ডও বের করতে হয়েছে রেফারিকে। উত্তপ্ত ফুটবল ম্যাচে এর চেয়ে বেশি কার্ড দেখানোর নজিরও আছে। তবে এক ম্যাচে দুই দলের ৬ জন খেলোয়াড় ও কোচসহ মোট ৭ জনকে লালকার্ড দেখানো, এমন ঘটনা বিরলই।
বোঝাই যাচ্ছে রিভারপ্লেটের ঘরের মাঠ এস্তাদিও মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে ফুটবলের চেয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের যুদ্ধই হয়েছে বেশি। ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলের খেলোয়াড়েরা নানন্দিক ফুটবলশৈলীকে বিসর্জন দিয়ে শরীরিক ফুটবলের প্রতি মনোযোগ দেয়। দুই দলের খেলোয়াড়েরাই পাল্লা দিয়ে ফাউলের পর ফাউল করতে থাকে! সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি, টানাটানির কান্ডও চলতে থাকে। ফলে বারবারই ছেদ পড়ছিল খেলায়। তবে এমন উত্তপ্ত প্রথমার্ধেও রেফারি একবার লাল কার্ড বের করেননি।
দ্বিতীয়ার্ধে অনেকটাই শান্ত পরিবেশ বিরাজ করে মাঠে। ধাক্কাধাক্কি, ফাউল বাদ দিয়ে ফুটবল খেলার দিকেই মনোযোগ দেন দুই দলের ফুটবলাররা। কিন্তু কোনো দলই গোল করতে পারছিল না। প্রথমার্ধের নষ্ট করা সময় পুষিয়ে নিতে রেফারি ১৫ মিনিট ইনজুরি সময় দেন। এই ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়ে যায় স্বাগতিক রিভারপ্লেট। ৮৩ হাজার দর্শকপূর্ণ মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামের গ্যালারি যেন আনন্দে নেচে উঠে। শেষ পর্যন্ত এই এক গোলেই জিতেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা রিভারপ্লেট। ম্যাচ যখন শেষের দিকে, ঠিক তখনোই শুরু হয় হাঙ্গামা। ফল ইনজুরি সময়ের ১৩ থেকে ১৫-এই তিন মিনিটের মধ্যে বোকার কোচসহ ৭ জনকে লালকার্ড দেখাতে বাধ্য হন রেফারি।