খায়রুল আলম সবুজ, বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি নাট্যাভিনেতা। বহু বছর পর কোনো নাটকের নাম ভূমিকায় তিনি অভিনয় করেছেন। নাম ‘দাদুর জাদু’। নাটকটি রচনা করেছেন ফারিয়া হোসেন এবং নির্মাণ করেছেন আরিফ খান। এরই মধ্যে খায়রুল আলম সবুজ তার অংশের কাজ প্রায় শেষ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। নাটকটিতে তার চার ছেলে মেয়ে এবং বেশ কয়েকজন নাতি-নাতনিকে দেখা যাবে।
খায়রুল আলম সবুজ বলেন, ‘নাটকটির গল্প আমার কাছে ভালো লেগেছে। আবেগী গল্প এটি। আমি দাদুর ভূমিকায় অভিনয় করেছি। দীর্ঘদিন আমার ছেলে মেয়েরা আমার নাতি নাতনিকে নিয়ে আমাকে দেখতে আসে না। তাই আমি অসুস্থতার ভান করি। যে কারণে আমার ছেলে মেয়েরা আমাকে দেখতে আসে। এগিয়ে যায় নাটকের গল্প। ফারিয়া বেশ আন্তরিকতা নিয়ে নাটকটির গল্প রচনা করেছেন। মাঝে মাঝে স্ক্রিপ্ট পড়ে আমি নিজেই ইমোশনাল হয়ে যাই। ফারিয়ার জন্য অনেক দোয়া। আর নাটকে যারা আমার সহশিল্পী আছেন প্রত্যেকেই যার যার চরিত্রে খুব ভালো অভিনয় করছে। আসলে এটি একটি পারিবারিক গল্পের নাটক তো সে কারণে এখানে যারা অভিনয় করছে প্রত্যেকেই আমরা যেন এক পরিবারের হয়েই কাজ করছি। আমার বিশ্বাস নাটকটি প্রচারে এলে দর্শকের ভালো লাগবে। নাট্যকার হিসেবে ফারিয়া বেশ প্রশংসিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।’ জানা যায় শিগগিরই নাটকটি একটি স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারে আসবে।
এদিকে খায়রুল আলম সবুজ শিগগিরই সাইফুল ইসলাম মান্নুর পরিচালনায় নতুন আরো একটি সিনেমার কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। মাত্র ১২ বছর বয়স থেকে বরিশালে থাকাকালীন অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন খায়রুল আলম সবুজ। তখন পাড়ায় পাড়ায় মঞ্চ করে নাটকে অভিনয় করতেন তিনি। তার অভিনীত প্রথম মঞ্চ নাটক ছিল ‘সূর্যমুখী’। এরপর পাকিস্তানের করাচিতে চলে যান পড়াশোনা করতে। সেখানে অনার্সের শুরু পর্যন্ত তিনি গান এবং অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পিটিভিতে তাকে ১৯৭০ সালে প্রথম গান গাইতে দেখা যায়। ১৯৭১ সালের ১৮ মার্চ খায়রুল আলম সবুজ ঢাকায় চলে আসেন। এসে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে। সেখানে ম. হামিদের সঙ্গে ডাকসু নাটক বিভাগ ‘নাট্যচক্র’ গড়ে তুলেন। হামিদ ছিলেন সভাপতি আর সবুজ ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ‘নাট্যচক্র’-এর মাধ্যমেই নাটকের এক বৈপ্লবিক আন্দোলন শুরু হয়। নাট্যচক্র থেকেই সেলিম আল দীন ও আল মনসুরের লেখা দুটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। এরপর সবুজ ‘থিয়েটার’-এ যোগ দেন। এই দলেই হয়ে মঞ্চে ২২ বছর অভিনয় করেছেন।