দেশের এক কোটি পরিবারের মাঝে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য সাশ্রয়ী দামে বিক্রি করার জন্য যে ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে, তাতে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না তা যাচাই করা হচ্ছে। এ জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৪০ জন কর্মকর্তাকে জেলাগুলোয় পাঠানো হয়েছে। তদন্তে অনিয়ম পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার রাজধানীর লালমাটিয়ায় হাউজিং সোসাইটি এলাকায় অক্টোবর মাসের টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে উপসচিব পর্যায়ের ৪০ জন কর্মকর্তাকে ৬৪ জেলায় পাঠানো হয়েছে। তারা কিছু তথ্য সংগ্রহ করবেন। সে তথ্য যাচাই করা হবে। কার্ড বিতরণে অনৈতিক প্রভাব বা আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আছে কি না, থাকলে কত শতাংশ কার্ডের ক্ষেত্রে হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। এ সময় তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি কার্ড বিতরণ হয়েছে ঢাকার বাইরে। কার্ড তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়ার্ড মেম্বাররা সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটা যাচাই-বাছাই কমিটি আছে। সেখানে একজন সরকারি কর্মকর্তাও যুক্ত রয়েছেন। কমিটি তালিকা যাচাই-বাছাই করে উপজেলায় পাঠিয়েছে। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেই তালিকা যাচাই-বাছাই করেছেন। তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ায় কোথাও কোনো ভুল হলে তা সংশোধন করা যাবে। কিন্তু এখনও কোথাও থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি যে, ধনিরা এ কার্ড পাচ্ছে। এ রকম কিছু হয়নি। এছাড়া টিসিবির কার্ড দিয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের ওএমএসের (ওপেন মার্কেট সেল) চালও সংগ্রহ করতে পারছেন ক্রেতারা।
এ দফায় কার্ডধারীরা ১ কেজি চিনি, ২ কেজি মসুর ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারবেন। প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা, মসুর ডাল ৬৫, সয়াবিন তেল ১১০ এবং পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে ২ কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি করার কথা থাকলেও জোগান না থাকায় তা বিক্রি শুরু হয়নি।
এদিকে কার্ডধারীদের কেউ কেউ মাসে দুই বার পণ্য বিক্রি ও এর সঙ্গে আটা ও চাল দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ফারজানা বেগম নামের একজন ক্রেতা বলেন, এ মাসে অনেক দেরিতে পণ্য বিক্রি করেছে টিসিবি। তবে এগুলোর সঙ্গে চাল, আটা দিলে ভালো হতো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান প্রমুখ।