নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ
নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বে অদম্য ছিল বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। সেই ধারা তারা বজায় রাখল সেমিফাইনালে ওঠে। ফাইনালে আজ নেপালের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। আসরের ফাইনালে এই প্রথম পরস্পরের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও নেপাল। বিকাল সোয়া ৫টায় দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এই প্রথম ভারতবিহীন ফাইনাল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নেপাল-বাংলাদেশ এর আগে কোনো আসরে শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি।
সেমিফাইনালে নেপালের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে ৮-০ গোলে ভুটানকে গুঁড়িয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
দুই দলেরই এর আগে ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও জয়ের মুখ দেখেনি একবারও। এরই মধ্যে নেপাল চারবার এবং বাংলাদেশ একবার ফাইনাল খেলেছে। প্রতিবারই তারা হেরেছে শক্তিশালী ভারতের কাছে। তবে প্রথমবারের মতো ভারতকে বাইরে রেখে ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ এবং নেপাল। সেই হিসেবে নতুন চ্যাম্পিয়ন পেতে যাচ্ছে সাফ। গ্রুপ পর্বে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত ৩-০ গোলে বাংলাদেশের কাছে পরাজিত হয়। এতে ভারতীয়দের মনোবল এতটাই দুর্বল হয়ে যায় যে, সেমিফাইনালে এসে নেপালের কাছে হেরে যায় ০-১ গোলে। এতেই বিদায় ঘটে চ্যাম্পিয়নদের।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্টে মেয়েরা ভালো খেলেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেছে। প্রতিটি ম্যাচেই ভালো ব্যবধানে জিতেছি আমরা। নিজেদের পুরো শক্তি দিয়েই খেলেছি। ভুটানের বিপক্ষে সবাইকে পরখ করে দেখা হয়েছে। যে যখন নামবে সেরাটাই দেবে। মেয়েরাও তাই দিয়েছে। কৃতিত্ব দেব খেলোয়াড়দের। প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টেই দুর্দান্ত খেলেছে। সব বিভাগেই সমানতালে যুদ্ধ করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে গোল আসবে। আমাদের কাছে জেতাটাই জরুরি ছিল। ঢাকা থেকে আসার সময় আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফাইনালে যাব এবং ট্রফি নিয়ে ফিরব।’ নেপালের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচ ট্রফি উঁচিয়ে দেশে ফিরতে চান কোচ ছোটন।
এদিকে নেপালের কোচ কুমার থাপা বলেছেন, নতুন একটি ইতিহাসের সামনে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। তাই আমরা সেই সুযোগ নষ্ট করতে চাই না। আমরা ভালো ফুটবল খেলে সেই গল্প লিখতে চাই। টুর্নামেন্ট থেকে ভারতের বিদায়ে স্বাগতিক কোচের এমন উচ্ছ্বাস। তিনি বলেন, ‘আমাদের সুযোগ ৯০ মিনিট। আমরা স্বাগতিক। কাপ এখানেই আছে। এখানেই রেখে দিতে চাই। দুই বছর এখানে ট্রফি এসেছে। আমি খুশি মেয়েদের সেমিফাইনালের খেলা দেখে। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে ট্রফি রাখতে চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘ইতিহাস লেখা হয় তা ভাঙার জন্যই। বয়সভিত্তিক খেলায় নেপাল হারলেও জাতীয় দলের খেলায় কিন্তু হেরেছে বাংলাদেশ। অবশ্য পেছনের কথা মনে করতে চাই না। দুদলই সেরা দল। খেলবেও সে রকম। ইমোশন ইজ হায়ার দেন প্রেশার। নেপালের জনগণ ফুটবল নিয়ে খায়, ঘুমায়। তাদের উপস্থিতিতে ইমোশন কিংবা প্রেশার কাজ করবে না। তারা ভালো ফুটবল দেখবে আমাদের কাছ থেকে।’ কুমার বলেন, ‘সম্পর্ক বন্ধুত্বের হতে পারে। ময়দানি খেলায় বন্ধুত্ব নেই। এখানে থাকে জেতার প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আমরা সেটাই করব।’