“টেকসই উন্নয়নের জন্য ভাষা” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২১ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, মায়ামি ৫২-র মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও বিনম্র শ্রদ্ধায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশী, বিদেশী আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অফ মায়ামি-এর বাংলাদেশী শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং ফ্লোরিডাস্থ বাংলাদেশী বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় সংগীতের সাথে কনসাল জেনারেলের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। এতে কন্স্যুলেট জেনারেল-র সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন।
বিকালে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে সমবেত কণ্ঠে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি” গানের সাথে সাথে কনস্যুলেটে স্থাপিত শহিদ মিনারের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপরে বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও মাননীয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
আলোচনা পর্বে ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বি এম গোলাম কিবরিয়া ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং এর ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। মায়ামি ডেড কলেজের ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মিস সামিলা সসিক মাতৃভাষা শিক্ষার গুরুত্ব এবং একটি টেকসই সমাজব্যবস্থা ও টেকসই উন্নয়নে মাতৃভাষার প্রয়োজনীয়তার উপরে আলোকপাত করেন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক জনাব ইমরান চাকলাদার প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য প্রদান করেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সমবেত কন্ঠে ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা’ গানটি পরিবেশন করেন। আমন্ত্রিত বিদেশী অতিথিবৃন্দ তাদের নিজ নিজ ভাষায় ( তুর্কি, চীন, থাই, কোরিয়া, বসনিয়া- হার্জিগোভিনিয়া) শুভেচ্ছা বার্তা দেন এবং কবিতা ও গান পরিবেশন করেন।
কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন তাঁর সমাপনী বক্তব্যে সকলকে ধন্যবাদ দেন এবং একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলের সহায়তা কামনা করেন। এছাড়াও তিনি আগামী প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব সম্পর্কে জানানোর জন্য তাদের পিতামাতাদের অনুরোধ করেন।
সবশেষে, আমন্ত্রিত অতিথিদের বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার আপ্যায়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।